শুক্রবার, ২৮ মার্চ ২০২৫, ০৬:১৮ অপরাহ্ন

প্রধান পৃষ্ঠপোষকঃ মোহাম্মদ রফিকুল আমীন
উপদেষ্টা সম্পাদকঃ জহির উদ্দিন স্বপন
সম্পাদক মণ্ডলীর সভাপতিঃ এস. সরফুদ্দিন আহমেদ সান্টু
প্রধান সম্পাদকঃ লায়ন এস দিদার সরদার
সম্পাদকঃ কাজী মোঃ জাহাঙ্গীর
যুগ্ম সম্পাদকঃ মাসুদ রানা পলাশ
সহকারী সম্পাদকঃ লায়ন এসএম জুলফিকার
সংবাদ শিরোনাম :
কোন অন্যায়কে প্রশ্রয় দেননি বলেই বেগম জিয়া ‘একজন আপোষহীন নেত্রী’-আবু নাসের মো: রহমাতুল্লাহ আন্তর্জাতিক সাংবাদিক আইনি প্রতিকার ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে এক জাঁকজমকপূর্ণ ইফতার দোয়া মাহফিল রাজনৈতিক ও সামাজিক কর্মকান্ডে প্রশংসিত বরিশাল উত্তর জেলা নারী নেত্রী বাহাদুর সাজেদা বরিশালে সাংগঠনিক সফরে আসছেন জাতীয় নাগরিক কমিটির কেন্দ্রীয় যুগ্ম সদস্য সচিব ডা: মাহমুদা মিতু দুই দিনের সফরে আজ বরিশাল আসছেন অতিথি গ্রুপ অব কোম্পানির এমডি লায়ন সাইফুল ইসলাম সোহেল  পিরোজপুর ভান্ডারিয়ার যুব মহিলা লীগ নেত্রী জুথি গ্রেফতার গৌরনদীতে তিন দফা দাবি আদায়ে ছাত্রদলের বিক্ষোভ মিছিল উপজেলা প্রশাসনকে ১৫ দিনের আল্টিমেটাম গ্রেনেড হামলার মামলা থেকে তারেক রহমানসহ বিএনপি নেতারা খালাস পাওয়ায় গৌরনদীতে আনন্দ মিছিল বরিশালের বাকেরগঞ্জসহ চারটি থানা এবং উপজেলায় নাগরিক কমিটি গঠন   আওয়ামী লীগ ও শেখ হাসিনা বিহীন বাংলাদেশ শান্তিতে থাকবে, এটা অনেকেরই ভালো লাগেনা-এম. জহির উদ্দিন স্বপন
কম ঘুষে বেশি ঘুরাঘুরি,বেশি ঘুষে কাজ তাড়াতাড়ি: ভোলায় ভূমি অফিস দুর্নীতির আখড়া

কম ঘুষে বেশি ঘুরাঘুরি,বেশি ঘুষে কাজ তাড়াতাড়ি: ভোলায় ভূমি অফিস দুর্নীতির আখড়া

ভোলা প্রতিবেদক ॥ ভোলা সদর উপজেলার রাজাপুর ইউনিয়ন ভূমি অফিসের সহকারী কর্মকর্তা নন্দলাল মজুমদারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়ম আর দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। বর্তমানে এই অফিস অনিয়ম আর দুর্নীতির আখড়ায় পরিণত হয়েছে। টাকা ছাড়া কোনো কাজ হয় না গুরুত্বপূর্ণ এই সরকারি অফিসে। এছাড়াও এই অফিসে ১০০-২০০ টাকার বিনিময়ে খতিয়ান বিক্রির ব্যবসা করা হয়। রাজাপুর ইউনিয়ন ভূমি অফিসে সাধারণ মানুষ নামজারি খারিজ কেসের প্রস্তাব প্রতিবেদন নিতে গেলে টাকা ছাড়া হয় না। খারিজের প্রতিবেদন ও সাধারণ মানুষকে বিভিন্ন কায়দা করে হয়রানি করে এই কর্মকর্তা।
গোপন সূত্রে জানা যায়, রাজাপুর ইউনিয়ন ভূমি অফিসের সহকারী কর্মকর্তা নন্দলাল মজুমদার এখানে যোগদান করার পর থেকে যা ইচ্ছা তাই করে যাচ্ছে। যদিও এর আগের কর্মকর্তা মিজানুর রহমানও ঘুষ গ্রহন ও নানান অনিয়মের কারনে সংবাদ প্রকাশিত হলে তাকে বদলি করা হয়। কিন্তু তাকে বদলি করে যাকে বসানো হয়েছে। তিনিও এখন নানান অনিয়ম আর দুর্নীতি করে যাচ্ছেন।
এলাকার সাধারণ মানুষ রাজাপুর ইউনিয়ন ভূমি অফিসের সহকারী কর্মকর্তা নন্দলাল মজুমদারের কাছে নামজারি খারিজ কেসের প্রস্তাব প্রতিবেদন নেওয়ার জন্য গেলে ২ হাজার ৫’শো টাকা থেকে শুরু করে বিভিন্ন কেসে তিনি ৫ হাজার থেকে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত নেয়।
সাধারণ মানুষ তার কাছে টাকা ছাড়া গেলে বিভিন্ন কায়দা-কৌশল করে হয়রানি করে। আর টাকা দিলে নামজারি খারিজ কেসের প্রস্তাব প্রতিবেদনগুলো দেন। টাকা ছাড়া কোনো কাজ করে না তহশীলদার নন্দলাল মজুমদার।
এখানে টাকা হলে সব হয়। টাকা না দিলেই এখানে সেবা নিতে আসা সাধারণ মানুষদেও বিভিন্ন বাহানায় হয়রানি করানো হয়। এছাড়া মোটা অংকের টাকা দিলেই নিজের পছন্দ মতো জমির খতিয়ান পাওয়া যায়।
এতে করে জমির প্রকৃত মালিকরা পড়ছেন নানা জটিলতায়। একই জমির মালিক একাধিক ব্যক্তি বনে যাচ্ছেন টাকার বিনিময়ে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেকেই জানান, এই ভূমি অফিসে টাকা ছাড়া কোনো কাজ হয় না। টাকা না দিলেই বিভিন্ন অজুহাতে আজ নয় তো কাল করে দিন কাটায় আর হয়রানি করা হয় দিনের পর দিন। এখানে একই কাগজ একাধিক ব্যক্তির কাছে হস্তানন্তর করা হয় অর্থের বিনিময়ে। আর এসব অর্থ আদান-প্রদানের সাথে জড়িত রয়েছে অফিসের দুই কর্মচারী আব্দুল মালেক ও আতিক।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই অফিসের এক কর্মকর্তা বলেন, দবড় সাহেব সরাসরি টাকা নেয়, টাকা যদি বেশি অঙ্কের হয়’ আর মনে করেন খতিয়ান বিক্রির সময় মানুষের কাছ থেকে যে, একশো দুইশো করে টাকা পাওয়া যায়। তা অফিসের শেষ সময়ে অর্থাৎ বিকেলের দিকে ভাগযোগ করে বড় সাহেব কিছু নেয়, মালেক ভাই কিছু নেয়, আতিক ভাই কিছু নেয়, আর চা-পান খাওয়ার জন্য আমাকে কিছু দেয়।
অভিযোগ উঠেছে ওই তহশিলদার নন্দলাল মজুমদার নিয়মিত অফিসেও আসেন না। মাঝেমধ্যে আসলেও বেলা সাড়ে এগারোটা কিংবা বারোটার দিকে আসেন। এসে আবার চলে যান।
এরকম অভিযোগের ভিত্তিতে রোববার সাড়ে বারোটার দিকে সরেজমিন রাজাপুর ইউনিয়ন ভূমি অফিসে গিয়েও কাউকে পাওয়া যায়নি। অফিসের ঝাড়ুদার জাহের লুঙ্গি পড়ে অফিসের কেচি গেট খুলে একটি চেয়ারে বসে রয়েছেন। দুর-দুরান্ত থেকে আসা সেবা প্রত্যাশিরা অফিসে এসে কাউকে না পেয়ে চলে যাচ্ছেন।
মাছকাজী ও ক্লোজার বাজার এলাকা থেকে জমির নামজারী নিতে আসা নূরুল ইসলাম, মহসিন, সুলাইমান ও আল ইমরান ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান, অনেক দুর থেকে মোটরসাইকেল ভাড়া নিয়ে অফিসে এসে দেখেন কেউ নেই। গত বুধবার দুপুর তিনটার দিকেও রৌদ্রের হাট বাজারের ব্যবসায়ি হুমায়ূন আহম্মেদ তাঁর জমিনের ডিসি আর আনতে গিয়েও কাউকে পাননি।
অফিসের ঝাড়ুদার জাহের বলেন, বড় সাহেব আজকে অফিসে আসেনি। আদালতে কাজ আছে সাহেবের। তাই তিনি আদালতে গেছেন। এক প্রশ্নের জবাবে জাহের বলেন, বড় সাহেব বাদেও আব্দুল মালেক ও আহাদ এই অফিসের পিয়ন হিসেবে চাকরি করে। এরমধ্যে মালেক সাহেবের সাথে আদালতে গেছে আর আতিক ঢাকা গেছে।
এবিষয়ে অভিযুক্ত রাজাপুর ইউনিয়ন ভূমি অফিসের সহকারী কর্মকর্তা নন্দলাল মজুমদার বলেন, ভাই আমার আর থাকতে ইচ্ছে হয়না রাজাপুর ভূমি অফিসে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমার আগে যে ছিল (মিজানুর) তিনি অনেক অনিয়ম দুর্নীতি করে গেছেন। আমি কোনো দুর্নীতি ও অনিয়ম করিনা। খতিয়ান বিক্রির বিষয়ে তিনি কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি। রোববার অফিসে গিয়ে কাউকে পাওয়া যায়নি? এমন প্রশ্নের জবাবে নন্দলাল বলেন, আদালতে আমার হাজিরা ছিল তাই সাক্ষী হিসেবে মালেককে সাথে নিয়ে গেছি। আর আতিক মুক্তিযুদ্ধার সন্তান। সে ঢাকায় গেছে। অফিসে কাউকে রেখে যাবো এমন কেউ ছিলোনা। তাই জাহেরকে রেখে গেছি। একাধিক প্রশ্ন করায় তিনি বলেন, ভাই সমবায় মার্কেটের সাংবাদিক অর্জুন আমার দাদা লাগে। তাঁর সাথে আমার ভালো সম্পর্ক রয়েছে। আপনি অফিসে আসিয়েন চায়ের দাওয়াত রইল। এতোকিছু জিজ্ঞেস করিয়েন না। এবিষয়ে সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আবু আবদুল্লাহ খান বলেন, সকল অনিয়ম এবং খতিয়ান বিক্রির বিষয়টি সঠিক হলে তাঁর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..



Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




© All rights reserved © 2017-2024 Dokhinerkhobor.Com
Desing & Developed BY ThemesBazar.Com